কাকতাড়ুয়ার আদলে তৈরী হওয়া এসব টপস শীত তাড়াতে ওস্তাদ, ফ্যাশনেও আনে নতুনত্ব
ফসলের মাঠে পাখি তাড়াতে দেওয়া হয় কাকতাড়ুয়া। এটির দুই হাত ছড়ানো থাকে সব সময়। কাকতাড়ুয়ার হাতের এ কনসেপ্টটিই যখন খাটানো হলো টপসে, তখন এর নাম হয়ে গেল কাকতাড়ুয়া টপস। এ টপসের কোনো কোনো ডিজাইনে শীত তাড়াতে থাকে হুডি, যা দেখতে কাকতাড়ুয়ার মাথার মতো। ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক বলেন, 'মূলত আফগান বা পাকিস্তানি পোশাক কাফতান কিছুটা শর্ট হয়ে এই টপসের আদল পেয়েছে। এতে কাফতান টাইপ লুক ধরে রেখে শেপটা দেওয়া হয়েছে কাকতাড়ুয়ার ছড়ানো হাতের মতো। বিবিআনার ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, 'যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে পোশাকেও পরিবর্তন আসে। এ টপসগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য যেকোনো ফিগারেই মানায়। শীতেরও উপযোগী। টিনএজার থেকে শুরু করে চাকরিজীবী মেয়েরাও পরতে পারবেন।'
এমন টপসের আরেকটি নতুন সংস্করণ বেরিয়েছে, যা আরো ছোট ও শুধু পাঁচকোনার কাপড়। একে অবশ্য পঞ্চও বলা হয়। কাপড়ের খণ্ডটি কাঁধের ওপর থেকে দুই পাশে সমান মাপে ঝুলিয়ে জামার ঢঙে বোতাম বা চিকন ফিতা লাগিয়েই পরা যায়। পরার পর হাতাগুলো কাঁধের ওপর দিয়ে ঝুলে থাকে। তখন দেখতে আরো বেশি কাকতাড়ুয়ার মতো মনে হয়। দুই থেকে আড়াই গজে মোড়ানো এ টপসে পুরো হাত ঢেকে থাকে এবং ত্রিকোনা ক্যাটিংয়ে ঝুলে থাকে।
রকমসকম
বিভিন্ন ধরনের হয় এ টপসগুলো। কোনোটা কলিদার, কোনোটা পাঞ্জাবি স্টাইলের, আবার কোনোটা ফ্রিল অর্থাৎ বুক ও কোমরে কুঁচি। হাতা বেশ ঢিলেঢালা, দুই পাশে ঝুল, সামনে ওভাল শেপ। সুতি, সিল্ক, তাঁত, খাদি ইত্যাদি কাপড়ে তৈরি হচ্ছে এসব টপস। তবে শীতের কারণে খাদি টপসের চাহিদা বেশি। গোলাপি, বাদামি, লাল, সবুজ, খয়েরি, হলুদ, বেগুনিসহ বিভিন্ন রঙের টপস রয়েছে।
কাটিং ও ডিজাইন
পোশাকটা ঢিলেঢালা হলেও কাঁধ আর বুকের মাপ কিন্তু ঠিকই থাকবে। হাতার ক্ষেত্রে ঘটিহাতাই প্রাধান্য পাচ্ছে। ঢিলা স্ট্রেইট, বেল স্লিফ হাতা অর্থাৎ ওপরে চাপা, নিচের দিকটা ঢোলা, শেপ হাতা, থ্রি-কোয়ার্টার হাতাও থাকছে। টপসের নিচের অংশেও বেশ বৈচিত্র্য দেখা যায়। সামনে কিছুটা ওভাল হয়ে দুই পাশে ঝুল অথবা চারপাশে ত্রিকোনাকার, ঢেউ খেলানো পাশাপাশি রাউন্ড শেপ তো থাকছেই। বাটিক, টাইডাই, অ্যাপলিক, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিনপ্রিন্ট ও হাতের কাজ টপসগুলোর সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণে। আবার কোনোটিতে গ্লাস, স্টোন ও সিকোয়েন্সের কাজ করা হয়েছে। কাপড়ে বিভিন্ন মোটিফের কাজও হচ্ছে। কাঠ, প্লাস্টিক, স্টোনসহ বিভিন্ন উপাদানে তৈরি হয়েছে বোতাম। আবার ছোট সংস্করণগুলো বোতাম ছাড়া। সালোয়ার, প্যান্ট না লেগিংস। সাদাকালোর ফ্যাশন ডিজাইনার তাহসীনা শাহীন বলেন, 'যেহেতু পোশাকের হাতা ঢিলা, তাই এর সঙ্গে একটু চাপা টাইপের জিন্স প্যান্ট বা থ্রি-কোয়াার্টার ভালো লাগবে। আর সবচেয়ে ভালো মানাবে লেগিংস। বাজারে এখন নানা রঙের লেগিংস পাওয়া যায়, যা এ টপসগুলোর সঙ্গে অনায়াসে মানিয়ে যাবে। কেউ চাইলে ঢোলা সালোয়ারও পরতে পারেন।মিলিয়ে পরুন'ঢিলেঢালা এ পোশাকের সঙ্গে ওয়েস্টার্ন লুকের গয়না ভালো মানাবে।' বললেন ডিজাইনার লিপি খন্দকার। 'কানে বড় রিং টাইপের দুল বা লম্বা ঝোলানো দুল, হাতে চিকন-মোটা কয়েক ধরনের চুড়ি। কাঠ, মেটাল, প্লাস্টিক- সব ধরনের চুড়িই মানায় এ পোশাকে। গলায় মালা পরতে চাইলে দুই বা তিন লহরের লম্বা ঝোলানো মালা ভালো দেখাবে। তবে সে ক্ষেত্রে কানে কিছু না পরাই ভালো।' তিনি আরো বলেন, 'পোশাকের ধরন, স্থান ও সময় বুঝে গয়না নির্বাচন করা উচিত। আর এ পোশাকের সঙ্গে সেমি হিল বা হিল জুতা বেশ মানাবে। চাইলে স্লিপারও ব্যবহার করতে পারেন।'
কোথায় পাবেন
ফ্যাশন হাউস অঞ্জন'স, সুই-সুতা, স্টুডিও এমদাদ, আড়ং, বিবিআনা, সাদাকালো, ইনফিনিটি এবং ট্যাসিসহ প্রায় সব ফ্যাশন হাউসেই পাবেন এ ধরনের ঢিলেঢালা টপস। এ ছাড়া রাজধানীর নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, মাসকাট প্লাজা, নর্থ টাওয়ার, টুইন টাওয়ারসহ বিভিন্ন মার্কেটে মিলবে।
Related Posts :
Subscribe by Email
Follow Updates Articles from This Blog via Email
No Comments