Tuesday, August 5, 2014

thumbnail

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে নুহাশপল্লীতে বৃষ্টি ও জ্যোৎস্নার রাত | শাকুর মজিদ -

  • হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে
  • নুহাশপল্লীতে বৃষ্টি ও জ্যোৎস্নার রাত | শাকুর মজিদ -
    দ্ধাঞ্জলি / শিল্প-সাহিত্য
    ফটোগ্রাফি: শাকুর মজিদ
    ফটোগ্রাফি: শাকুর মজিদ
    Decrease fontEnlarge font
    মাত্র কুড়ি দিনের জন্যে চিকিৎসা-বিরতির ছুটি পেয়ে এসেছিলেন দেশে। ১১ মে ২০১২ বিমানবন্দর থেকে নেমেই প্রিয় নুহাশপল্লীতে চলে গিয়েছিলেন। ঢাকা ফিরলেন ১৪ মে। ২২ মে চলে গেলেন নুহাশপল্লী। আরও ২-৩ দিন থেকে ২৫ মে ফিরে আসবেন ঢাকায়। ২৯ মে পর্যন্ত থাকবেন দখিন হাওয়ার ফ্ল্যাটে। বাকি থাকে দু’রাত। সে দু’রাত একেবারেই একান্তে কাটানোর জন্যে, বিশেষ করে গুণগ্রাহী ও সাংবাদিকদের থেকে দূরে থাকার জন্যে থাকবেন গুলশানে শ্বশুরবাড়িতে। তারপর অপারেশনের জন্যে পুনরায় আমেরিকা যাত্রা।

    ১৪ মে থেকে প্রায় প্রতিদিনই আমাদের দেখা হয়েছে। কখনো দিনে একবার, কখনো দু’বার। প্রায় প্রতিরাতেই রাতের খাবার খেতে হতো দখিন হাওয়ায়, কখনো কখনো দিনের বেলাও। যে ক’দিন দেশে ছিলেন, তাঁদের নিজের চুলায় হাঁড়ি বসাতে হয় নি। বন্ধুবান্ধব, স্বজনরা রুটিন করে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন বাসায়। খাবারের পরিমাণ— এলাহি কাণ্ড। দশ পদের নিচে কেউ খাবার পাঠান না। বেশির ভাগই নিজের হাতে রেঁধে, কেউ কেউ নামিদামি হোটেলের খাবারও পাঠিয়েছেন। কেবল নুহাশপল্লীতে যে ক’দিন ছিলেন, সে ক’দিন তাঁর বাবুর্চি রেঁধেছে। গরুর মাংস, মুরগির মাংসের বাইরেও তাঁর প্রিয় জিয়ল মাছের একটা তরকারিও সব সময় থাকত।

    দখিন হাওয়ার সময়টা তিনি দিনের বেলা একান্তে কাটাতে পারতেন। এ সময় বারান্দায় বসে বসে বই পড়তেন, কিংবা ছবি আঁকতেন। এর মধ্যে একটা টেলিফিল্মের চিত্রনাট্য লিখেছেন এবং দেশ ছাড়ার দু’দিন আগে এর প্রযোজক ও পরিচালককে পড়িয়েও শুনিয়েছেন। তাঁর শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’ নিয়ে আদালতের নজরে আনা হয়। প্রথম আলো-তে এর দু’টো অধ্যায় ছাপা হয়েছিল মাত্র। এবিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটা বিশাল আকৃতির বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পেপার বুক পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করা হয় এ নথিটি অনুসরণ করার জন্যে। শেখ রাসেলকে হত্যা করার আগে সে ভাবির কাছে লুকিয়ে ছিল, না কাজের ছেলে রমার কাছে লুকিয়ে ছিল— এটা নিয়ে ইতিহাস বিকৃতি ঘটেছে। তাঁর কাছে যে দু’টো বই আছে সেখানে লেখা ভাবির কাছে, সরকারি নথিতে আছে কাজের ছেলের কাছে। এসব নিয়ে প্রতিদিনই বেশ কিছু লোক তাঁকে নানা রকম পরামর্শ দিতেন। আর মাঝে মাঝে ছবি আঁকতেন। নিউইয়র্কে বসে বেশ ক’টি ছবি আঁকা হয়েছিল তাঁর— এগুলো নিয়ে একটা প্রদর্শনী হবে জুন মাসের ২৯ তারিখে নিউইয়র্কে। সেটার ক্যাটালগ তৈরি, নতুন ছবি আঁকা, নিউইয়র্কের ডাক্তার কখন কী বললো, সে সবের কাহিনী শোনানো— এমন করেই তাঁর দিনরাত্রি কেটে যাচ্ছিল।



    তিনি নুহাশপল্লী বা দখিন হাওয়া, যেখানেই থাকুন না কেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা আর বোন, শিখু আপা। মা’র একটা গল্প প্রায়ই শোনাতেন। আমেরিকায় তিনি যখন চিকিৎসাধীন, তখন মা তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে পাঁচ হাজার ডলার পাঠিয়ে দিয়েছেন ছেলের চিকিৎসার জন্যে। মা’র এ টাকা পাঠানোর বিষয়টিই মূলত তাঁকে অনেক বেশি আবেগাপ্লুত করে। সিদ্ধান্ত নেন, দেশে যে ক’টি দিন থাকবেন, মাকে সঙ্গে নিয়েই থাকবেন।

    ২৪ মে আমি আর আলমগীর ভাই একসঙ্গে রওয়ানা দেই নুহাশপল্লীতে। সপরিবারে মাজহার ও কমল চলে গেছে আগেই। তাদের সঙ্গে আলমগীর ভাইর স্ত্রী ঝর্ণা ভাবিও আছেন। আলমগীর ভাই তাঁর নিজের বিছানা ছাড়া রাতে ঘুমাতে পারেন না, আর রাতে কখনো একা চলতে পারেন না। একারণে তাঁর যাওয়া হয় নি। আজ ভোরেই রওয়ানা দেবেন আমাকে নিয়ে। আমি রাতে থাকবো না, ঢাকা ফেরত আসবো। এ নিয়ে তাঁর অনেক আনন্দ, রাতে আমার সঙ্গে ফিরবেন।

    আমরা দুপুরবেলা পৌঁছাই। বেশ নিরিবিলি পরিবেশ। সাংবাদিক নাই, ক্যামেরা নাই। কোনো একটা নাটকের শুটিং ছিল আজ, সে নাটকের শুটিংও শেষ হয়েছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। আকাশে চাঁদ, কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি। এক সময় বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে গেল অনেকগুণ। হুমায়ূন আহমেদের বেডরুমেই আমরা সবাই বসে। আলমগীর ভাই উশখুশ শুরু করেন। এখনই না বেরোলে দেরি হয়ে যাবে। অন্তত তিনঘণ্টা সময় লাগে ঢাকা যেতে। তিনি আমাকে নিয়েই যেতে চান— ড্রাইভার এসে খবর দিয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ ড্রাইভারকে জানালেন, শাকুর যেতে চাচ্ছে না। তাঁকেও থাকতে বলছে।

    এরপর তাঁর কোনো খবর নাই। আমরা বৃষ্টি দেখি, জ্যোৎস্না দেখি, চাঁদ দেখি, মেঘ দেখি। বৃষ্টি ও জ্যোৎস্না একসঙ্গে দেখা যায় না। কিন্তু হঠাৎ মনে হলো, এই জ্যোৎস্না ও বৃষ্টি বিলাসীর জন্য আজ এ দু’য়ের একত্র সঙ্গম ঘটছে। ঘটনাটা অন্য রকম। বেশ জোরে বৃষ্টি হচ্ছে, হুমায়ূন আহমেদ তার বেডরুমের দরোজা খুলে রেখেছেন। দরোজার পরেই বারান্দা। সেই বারান্দার পরে চল্লিশ ফুট দূরে একটা লাইটপোস্ট। সেই লাইটপোস্টের বাতি জ্বলছে। বৃষ্টি ও অন্ধকারের জন্য ওই বাতিটুকু ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ঘরটির সামনে বেশ বড়সড় গাছ, সেই গাছের চিকন চিরল পাতার ফাঁক দিয়ে যেটুকু আলোর কিরণ চোখে এসে লাগছে তাকে জ্যোৎস্নার বৃষ্টির রাত বলেই মনে হচ্ছে। এর মধ্যে মাঝে মাঝে শাওন গাইছে হুমায়ূনের মন ভালো করানো গান।



    আমরা সবাই আলমগীর ভাইয়ের কথা ভুলে যাই। বৃষ্টি থামলে আলমগীর ভাইকে ফোনে পাওয়া যায়। তিনি তখন গাজীপুর চৌরাস্তা পার হয়ে গেছেন। বৃষ্টি থেমে গেছে খানিক আগে। আকাশে চাঁদ। আমরা ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি।

    জ্যোৎস্নাবিলাসী এ মানুষটির জ্যোৎস্নাপ্রীতির খবর কারো কাছে নতুন নয়। তাঁর সেই প্রথম উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’ থেকে শুরু করে শেষ জীবনের যে-কোনো লেখাতেই জ্যোৎস্নার কথা বলা আছে। জ্যোৎস্না নিয়ে অনেকগুলো গানও আছে তাঁর। নিজের লেখা মরণগীতিতেও তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছেন, যাতে চন্দ্রালোকিত রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। চন্দ্রালোকিত রাতকে তিনি বলতেন ‘চান্নি পসর’ রাইত। ‘চান্নি পসর’ খাস নেত্রকোণার শব্দ। আমাদের সিলেটের সঙ্গে মিল আছে। আমরা বলি ‘চান্নি রাইত’। এই ‘চান্নি পসর’ তাঁকে দেখিয়েছিল মামা বাড়ির এক লোক। বলছিল, ভাইগনা ‘চান্নি’ দেখতে অইলে আও আমার লগে। নেত্রকোণার বিশাল খোলা মাঠে ভরা পূর্ণিমা রাতে মামা বাড়ির লোক তাঁকে যা দেখিয়েছিল, সেটা তিনি ভুলতে পারেন নি। আর সে কারণেই, হাছন রাজা যেমন আউলা হতেন ভরা পূর্ণিমা দেখা হাওড়ে, হুমায়ূনকেও আউলা করতো জ্যোৎস্নার চাঁদ।

    তাঁর জ্যোৎস্নাভোগের অনেক কাহিনী শুনেছি, লেখাতেও পড়েছি কিছু। কিন্তু একসঙ্গে দেখা হয় নি তেমন। একবার, ২০০৮ সালে ৫ দিনে সুন্দরবন সফরে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। অন্ধকার রাতে বঙ্গোপসাগরের প্রান্ত ঘেঁষে একটা চাঁদ উদয় হওয়ার দৃশ্য দেখানোর জন্যে আমাকে আমার কেবিন থেকে ডেকে এনে ছবি তুলতে বলেছিলেন। আমি আমার মতো ছবি তুলেছি, তিনি তাঁর মতো ঝিম মেরে বসে থাকলেন। এই আমাদের একত্রে চাঁদ দেখা।

    নুহাশপল্লীতেও এক রাতে আমরা সবাই মিলে বসেছিলাম তাঁর ঘরের সামনের জাপানি বটের নিচে। হঠাৎ দেখা গেল আকাশে চাঁদ। আমি একটা বেঞ্চির উপর শুয়ে পড়লাম। শুয়ে না পড়লে চাঁদ দেখা যায় না। ঘাড় বাঁকা করে চাঁদ দেখা বড়ই বিরক্তিকর। বিষয়টি দেখে তিনি মোস্তফাকে ডাকেন । বলেন— ওই কার্পেটটা এখানে বিছাও।

    সঙ্গে সঙ্গে নুহাশপল্লীর ঘাসের উপর বিছানো হলো বিশাল কার্পেট। চলে এলো বালিশও। আমাকে আরাম করে চাঁদ দেখানোর জন্যে তার এই আয়োজন।

    নুহাশপল্লীর স্টাফদের অনেক গুণ। শুধুই মালি-বাবুর্চি-দারোয়ান নয়। প্রত্যেকে যে এতদিনে পাকা অভিনেতা হয়ে গিয়েছে তা তার নাটকগুলো দেখেই জেনেছি। কিন্তু তারা যে গানও গাইতে পারে এটা জানতাম না। চন্দ্রালোকিত রাতে তারা হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল, বাঁশি নিয়ে বসে পড়ে। স্যারকে গান শোনায়। তার বেশ কিছু স্যারের লেখা, বাকিগুলো স্যারের পছন্দের গান। কোনোটা হাছন রাজা, উকীল মুন্সি, রাধারমণ বা আবদুল করিমের।

    আজকের রাতটিও অনেকটা সে রকম। কিন্তু এখন স্যারের শরীর খারাপ। তাঁর স্টাফদের মধ্যে সেই প্রাণচাঞ্চল্য নাই। সবাই মুখ বেজার করে আছে, কিসে স্যারকে তুষ্ট রাখা যায়, সেই চিন্তায়।



    রাত প্রায় বারোটা হবে। ৭-৮ জনের একটা দল রাতের বেলা নুহাশপল্লীতে হাঁটাহাঁটি করছি। সবার লক্ষ্য হুমায়ূন আহমেদ। তিনি যে দিকে হাঁটছেন, সবাই পিছু পিছু। এই দলে হুমায়ূন আহমেদ, সস্ত্রীক মাজহার আর কমল। আমি আর ঝর্ণা ভাবি। আমার স্ত্রী কেন আমার সঙ্গে এখানে নেই এটা সবাই জানেন, কেউ এখন আর এ নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করে না।

    আমরা হুমায়ূন আহমেদকে অনুসরণ করে করে চলে আসি একেবারে দিঘি বরাবর। এখানে নতুন দুটো কটেজ বানানো হয়েছে স্থপতি মেহের আফরোজ শাওনের ডিজাইনে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভূত বিলাস’। যারা ভূত দেখতে নুহাশপল্লীতে আসবেন, তাদের জন্যে এখানে থাকার ব্যবস্থা থাকবে। ভূত যদি থেকেই থাকে, তাহলে তো দেখবেনই, আর যদি না থাকে— তবে পয়দা করা হবে। নুহাশপল্লীতে ভূত পয়দা করার কারখানা তৈরি হবে।



    দিঘির পূর্ব পাশে একনাগাড়ে ৫-৬টি কটেজ হবে। আমরা তার একটির ভেতর প্রবেশ করি। এখানে কোনো ফার্নিচার বসে নি এখনো, ফার্নিচার ছাড়া সবকিছুর কাজ শেষ। ফিটিংস বসানো আছে। ঘরের ওপাশে দিঘির উপর কেন্ডিলিভার করে প্রশস্ত বারান্দা। এ বারান্দায় আমরা ৮জনই বসে পড়ি। হুমায়ূন আহমেদ একের পর এক চুটকি শোনাতে থাকেন, শাওনকে গান গাইতে বলেন। শাওনও গান গায়। সবই গীতিকার হুমায়ূন আহমেদের গান।

    রাত প্রায় দুটো বাজে। হুমায়ূন আহমেদ একসময় সিগারেটের জন্যে মরিয়া ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে পছন্দের উপকরণের একটা ছিল এই সিগারেট। অথচ এখন একবারের জন্যেও সিগারেট নিয়ে উশখুশ করছেন না। আমেরিকা যাওয়ার পরপরই তিনি সিগারেট ছেড়েছেন। আমাদের দলে প্রায় সবাই [আলমগীর ভাই সদ্য দলছাড়া হয়েছেন] স্মোকার। এ দলে নেতৃস্থানীয় ছিলেন হুমায়ূন। এখন তিনিও ‘আধুনিক’-এর সদস্য। সিগারেট খাচ্ছেন না। সামনে খেলে যদি তাঁর কষ্ট বাড়ে, এ আশংকায় আমরাও খাচ্ছি না। এটা দেখে তিনি অবাক হচ্ছেন। বারবার বলছেন, তোমাদের কী হলো, তোমরা খাচ্ছো না কেন? খাও খাও, আমার সমস্যা হচ্ছে না এখন। সিগারেটের নেশা আমার মাথা থেকে চলে গেছে। এটা যেমন বলছেন, আবার এ-ও বলছেন যে, সিগারেটে আসলে কোনো লাভ নাই। কিন্তু মানুষ যে কেন এটা খায়! নিশ্চয় কারণ আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মানুষ এই জিনিসটার প্রতি আসক্ত। তাদের সবাই জানে যে এটা কাজের কাজ কিছুই করে না, কোনো লাভ নেই তার মধ্যে, তারপরও এটা পোড়ানোতে মানুষের এত আনন্দ।

    রাত অনেক হয়ে গেছে। ‘ভূত বিলাস’ নিয়ে আরো কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ঠিক হয়, সামনের ১২ তারিখের অপারেশনের পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফেরত আসার পর এগুলো কার্যকর হবে।



    আমরা আস্তে আস্তে উঠে আসি। নিচের দিঘির পাড় থেকে একটা উঁচু টিলা বেয়ে উঠতে হয়। এই টিলা বাওয়া নিয়েও কত রসিকতা করেছেন তিনি। একবার দখিন হাওয়ায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন এভারেস্ট জয়ী এম.এ. মুহিত। আমাদের সঙ্গেও অনেক কাচ্চা-বাচ্চা-তরুণ খুব আগ্রহ নিয়ে এভারেস্টের উপরে ওঠার কৌশল শিখতে চাইল মুহিতের কাছে। এক তরুণকে কাছে ডেকে বললেন, যাও, তুমি আগে নুহাশপল্লীর টিলাটা জয় করে আসো, তারপর এভারেস্টের খোঁজে যেয়ো।

    আমরা সেই এভারেস্ট জয় করে উপরে সমতলে উঠে আসি। সেখানে বিরাট মাঠ। পাশ দিয়ে ইট বিছানো হাঁটা পথ আছে। সেই পথে না গিয়ে মাঠের দিকে হাঁটতে থাকি। মাঠ পার হয়ে উপরের সীমানা প্রাচীরের কাছে কতগুলো লিচুগাছ। গাছগুলোর নিচে গাছের গোড়াকে কেন্দ্র করে ঘোরানো প্লাটফর্ম। নুহাশপল্লীর ম্যানেজার বুলবুল বলেছিলেন, মারা গেলে যেন এখানে তাঁকে কবর দেওয়া হয়। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনো কথাবার্তা বলি না। মহিলারা প্রায় সবাই ঘরের দিকে চলে যান। আমরা চারজন পুরুষ [হুমায়ূন, মাজহার, কমল আর আমি] এখানে কিছুক্ষণ বসি। নানা রকম কথাবার্তা বলি। আড্ডার সব কথা কি মনে থাকে! এক সময় শেষ রাতের দিকে আমরা ভেতরের ঘরে গিয়ে ঘুমাই।


    Related Posts :

    Subscribe by Email

    Follow Updates Articles from This Blog via Email

    No Comments

    About